নিউজ ডেস্ক: ঢাকা জেলা কমিটি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বিএনপির একাধিক নেতা। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান। তিনি বলছেন, এ কমিটিতে নিজের অনুসারীরা ‘পর্যাপ্ত পদ না পাওয়ায়’ তিনি এই কমিটি মানবেন না। এমনকি কেন্দ্রের অপর তিন নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র, দেওয়ান সালাউদ্দিন ও আবু আশফাকের অনুসারীদের কমিটিতে স্থান দিতে গিয়ে তার অনুসারী ‘ত্যাগী’ নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন আমান। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে আমানের অভিযোগের বিষয়ে জানা গেছে।
এ অবস্থায় গত ১১ এপ্রিল ঢাকা জেলা বিএনপি কমিটির পরিচিতি সভায় আমান গ্রুপের নেতাকর্মীরা অন্যদের সঙ্গে হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। ‘অবৈধ কমিটি, মানি না, মানবো না’ বলে স্লোগানও দেন তারা।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৩০ আগস্ট দেওয়ান সালাউদ্দিনকে সভাপতি ও আবু আশফাককে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। এর আড়াই বছর পর গত ২৭ মার্চ ২৬৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, উপরোক্ত চার নেতার চাহিদা অনুযায়ী ঢাকা জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে লন্ডনে তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়। তিনি তা অনুমোদনও দেন। ২৬৬ সদস্যের কমিটির মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ৬২ জন অনুসারী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমানের ২৯ জন, জেলা কমিটির সভাপতি দেওয়ান সালাউদ্দিনের ৮০ জন এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু আশফাকের ৭৭ জন অনুসারী পদ পেয়েছেন। এই চার নেতার অনুসারীদের বাইরে পদ পেয়েছেন মাত্র ১৮ জন। তবে কমিটিতে আমানপন্থীরা সংখ্যায় কম হওয়ায় শুরু থেকে তারা বিদ্রোহ করে আসছেন।
গত ১১ এপ্রিল রাজধানীর নয়াপল্টন ভাসানী ভবনে ঢাকা জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু সভার কয়েক মিনিটের মধ্যে কমিটিতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের অনুসারীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন আমান উল্লাহর অনুসারীরা। এক পর্যায়ে গয়েশ্বর ও আমান উল্লাহর অনুসারীদের নেতাকর্মীরা হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আমানের অনুসারীরা ভাসানী ভবনের দরজা ভেঙে ফেলারও চেষ্টা করেন। পণ্ড হয়ে যায় সভা।
ঢাকা জেলা কমিটি সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আমান উল্লাহ আমান পদ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে বলেন, আমার কাছে তথ্য আছে-ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বাণিজ্য হয়েছে। আর তা হয়েছে এক জনের নির্দেশেই। আমি এর বিরোধী ছিলাম বলে আমাদের কর্মীদের কমিটিতে তুলনামূলক কম পদ দেয়া হয়েছে। তবে আমাকে না জানিয়ে আমাদের কর্মীদের কাছে অর্থ চাওয়া হয়েছে এই তথ্য-প্রমাণও এখন আমার হাতে রয়েছে। এত দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি মানা যায় না। দলের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করে পদ বাণিজ্যের সম্মুখীন হওয়া আমাদের কাম্য নয়।
এমতাবস্থায় ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়ে যে অস্থিতিশীলতা তৈরি হলো তা বিএনপির জন্য নতুন অশনি সংকেত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দলীয় সূত্র বলছে, আমান উল্লাহ আমানকে নিয়ে এক ধরণের বিপাকেই পড়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও।বাংলা নিউজ ব্যাংক
রাজশাহীর সময় ডট কম –১৫ এপ্রিল ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.